ঢাকা ০৫:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১৭ বছর পর মেয়েকে খুঁজে পেলেন বাবা-মা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:৪৯:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ জানুয়ারী ২০২১
  • ২৪৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণে ১৭ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া তানিয়া আক্তারকে (২৫) খুঁজে পেলেন বাবা-মা। সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর শহরের শান্তিনগর এলাকায় মেয়ে তানিয়ার সন্ধান পান সুন্দর আলীর পরিবার।

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার সুন্দর আলীর মেয়ে তানিয়া আক্তার। তানিয়া এখন আখাউড়া পৌর শহরের শান্তিনগর এলাকার আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী। তানিয়া স্বামীর সঙ্গে সেখানেই বসবাস করছেন। এখন তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের মা। সুন্দর আলী এখন মেয়ে, জামাতা, নাতি-নাতনি নিয়ে কোটালীপাড়ায় তার গ্রামের বাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

তানিয়া আক্তার বলেন, ‘স্কুলের দরোয়ান আমাকে ভেতরে যেতে বাধা দিলে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকি। বাসার রাস্তা না চেনায় এক পর্যায়ে একটি বাসে করে সংসদ ভবনের কাছে আসি। সেখানে দোকানে টেলিভিশন দেখতে দেখতে রাত হয়ে যায়। তখন বাসায় যেতে অনেক কান্নাকাটি করি। কিন্তু ঠিকানা বলতে না পারায় এক হিন্দু লোক আমাকে তার বাসায় নিয়ে যায়। পরদিন আমাকে পরিবারের কাছে পৌঁছে দিতে তিনি অনেক জায়গায় খোঁজ করেন। এক পর্যায়ে কলাবাগান এলাকার আরজুদা খাতুন মিলন ও তার ছেলে রিপন আমাকে তাদের বাসায় নিয়ে আসেন। তারপর থেকে তারাই আমাকে আদর-যত্নে লালন পালন করেছেন। আমি রিপনকে বাবা ডাকি। তারা আমাকে বিয়ে দেন।’ রিপনের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার রায়তলা গ্রামে।

তানিয়ার স্বামী আনোয়ার হোসেন তার ফেসবুক আইডিতে তানিয়ার ছোট বছসের ছবি পোস্ট করে বাবা-মার সন্ধান যান। আর সেই সূত্র ধরে তানিয়ার বাবা-মায়ের সন্ধান মেলে।

তানিয়ার ছোট বোন সনিয়া খানম বলেন, ‘বোনের ছোট বয়সের অনেক স্মৃতি আমার মনে আছে। বোনকে হারানোর পর সব সময় মন খারাপ থাকতো। ভাবতাম বোনকে বুঝি কখনও পাবো না। তবে মা বলতেন- এই দেশটা ছোট, একদিন না একদিন ঠিকই তানিয়াকে খুঁজে পাবেন। আজ আমাদের সবার আশা পূরণ হয়েছে।’

বাবা সুন্দর আলী বলেন, ‘এভাবে মেয়েকে খুঁজে পাবো তা কখনও কল্পনাও করিনি। মেয়ে হারানোর পর সময় যে কত কষ্টের, তা সেই বাবা-মাই বোঝেন; যাদের সন্তান হারিয়েছে। বহু দিনের বুকের কষ্ট আজ দূর হলো।’

তানিয়ার স্বামী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি সব কিছু জেনেই তানিয়াকে বিয়ে করি। বিয়ের পর তার পরিবারের সন্ধান পেতে অনেক চেষ্টা করেছি। আল্লাহর রহমত থাকায় সেই চেষ্টা সার্থক হয়েছে। আমি খুবই খুশি।’
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

১৭ বছর পর মেয়েকে খুঁজে পেলেন বাবা-মা

আপডেট টাইম : ০৭:৪৯:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ জানুয়ারী ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণে ১৭ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া তানিয়া আক্তারকে (২৫) খুঁজে পেলেন বাবা-মা। সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌর শহরের শান্তিনগর এলাকায় মেয়ে তানিয়ার সন্ধান পান সুন্দর আলীর পরিবার।

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার সুন্দর আলীর মেয়ে তানিয়া আক্তার। তানিয়া এখন আখাউড়া পৌর শহরের শান্তিনগর এলাকার আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী। তানিয়া স্বামীর সঙ্গে সেখানেই বসবাস করছেন। এখন তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ের মা। সুন্দর আলী এখন মেয়ে, জামাতা, নাতি-নাতনি নিয়ে কোটালীপাড়ায় তার গ্রামের বাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

তানিয়া আক্তার বলেন, ‘স্কুলের দরোয়ান আমাকে ভেতরে যেতে বাধা দিলে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকি। বাসার রাস্তা না চেনায় এক পর্যায়ে একটি বাসে করে সংসদ ভবনের কাছে আসি। সেখানে দোকানে টেলিভিশন দেখতে দেখতে রাত হয়ে যায়। তখন বাসায় যেতে অনেক কান্নাকাটি করি। কিন্তু ঠিকানা বলতে না পারায় এক হিন্দু লোক আমাকে তার বাসায় নিয়ে যায়। পরদিন আমাকে পরিবারের কাছে পৌঁছে দিতে তিনি অনেক জায়গায় খোঁজ করেন। এক পর্যায়ে কলাবাগান এলাকার আরজুদা খাতুন মিলন ও তার ছেলে রিপন আমাকে তাদের বাসায় নিয়ে আসেন। তারপর থেকে তারাই আমাকে আদর-যত্নে লালন পালন করেছেন। আমি রিপনকে বাবা ডাকি। তারা আমাকে বিয়ে দেন।’ রিপনের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার রায়তলা গ্রামে।

তানিয়ার স্বামী আনোয়ার হোসেন তার ফেসবুক আইডিতে তানিয়ার ছোট বছসের ছবি পোস্ট করে বাবা-মার সন্ধান যান। আর সেই সূত্র ধরে তানিয়ার বাবা-মায়ের সন্ধান মেলে।

তানিয়ার ছোট বোন সনিয়া খানম বলেন, ‘বোনের ছোট বয়সের অনেক স্মৃতি আমার মনে আছে। বোনকে হারানোর পর সব সময় মন খারাপ থাকতো। ভাবতাম বোনকে বুঝি কখনও পাবো না। তবে মা বলতেন- এই দেশটা ছোট, একদিন না একদিন ঠিকই তানিয়াকে খুঁজে পাবেন। আজ আমাদের সবার আশা পূরণ হয়েছে।’

বাবা সুন্দর আলী বলেন, ‘এভাবে মেয়েকে খুঁজে পাবো তা কখনও কল্পনাও করিনি। মেয়ে হারানোর পর সময় যে কত কষ্টের, তা সেই বাবা-মাই বোঝেন; যাদের সন্তান হারিয়েছে। বহু দিনের বুকের কষ্ট আজ দূর হলো।’

তানিয়ার স্বামী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি সব কিছু জেনেই তানিয়াকে বিয়ে করি। বিয়ের পর তার পরিবারের সন্ধান পেতে অনেক চেষ্টা করেছি। আল্লাহর রহমত থাকায় সেই চেষ্টা সার্থক হয়েছে। আমি খুবই খুশি।’